মোবাইল ফোন মানুষের জীবনের বিরাট এক অবদান। যা প্রতিনিয়ত পরিবর্তন এনেছে মানুষের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন কাজে কর্মে। স্মার্টফোনের যুগে অবস্থান করে আমরা নানারকম সুবিধা ভোগ করতে পারছি। আগের কার দিনে লোকজন মোবাইল ফোন ব্যবহার করত শুধু কথা বলার জন্য। তাই আজকে টপিকে আমরা বিস্তারিত তুলে ধরতে চেষ্টা করব নতুন প্রযুক্তির স্মার্টফোন ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধার কিছু পয়েন্ট।
বর্তমানে অনেক অনেক বেশি সুবিধা ভোগ করা যাচ্ছে এই স্মার্টফোনের মাধ্যমে। এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ভিডিও কলে কথা বলা থেকে শুরু করে নানারকম ভার্চুয়াল মাধ্যমে আমরা যোগাযোগ করতে সক্ষম হতে পারছি।
স্মার্টফোন কি
হাতের মোবাইল কম্পিউটিং যন্ত্রকে বলা হয় স্মার্ট ফোন। স্মার্টফোনকে সেলফোন ও বলা হয়।সাধারণ ফোন গুলোর মধ্যে স্মার্টফোনের পার্থক্য হল শক্তিশালী হার্ডওয়ার সক্ষমতা।সাধারণ ডিভাইস গুলোর মাধ্যমে মেসেজ কিংবা কল করা যায়।
আর স্মার্টফোনের মাধ্যমে আপনি কল কিংবা মেসেজ এর পাশাপাশি ইন্টারনেটের সুবিধা পাচ্ছেন।তাই দেরি না করে জেনে নিন স্মার্টফোন ব্যবহারের সুবিধা।
যোগাযোগ ব্যবস্থা
স্মার্টফোন ব্যবহারের মাধ্যমে খুবই সহজলভ্য হয়ে উঠেছে যোগাযোগ ব্যবস্থা।আগে মানুষ যোগাযোগের জন্য এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে চিঠি আদান প্রদান করত। কিন্তু বর্তমানে ঘরে বসে থেকেই সারা বিশ্বের সাথে যোগাযোগ করা যাচ্ছে।
এর জন্য কিছু ভার্চুয়াল মাধ্যম রয়েছে।আর সেগুলো হলো টেক্সট,মেসেজিং,কল,ভিডিও চ্যাট,এগুলো সারা বিশ্বজুড়ে যোগাযোগ করার অবিলম্বে অনুমতি দেয়।
ব্যবসা
বর্তমানে লক্ষ লক্ষ মানুষ স্মার্টফোনের মাধ্যমে নানা রকম ব্যবসা শুরু করেছেন। এটি বেকার তরুণ-তরুণীদের জন্য অন্যতম একটি মাধ্যম।স্মার্টফোনের মাধ্যমে আমরা ঘরে বসেই ব্যবসা ও নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছি।
লোকেশন
আগে যখন মানুষ কোন গন্তব্যে পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে বের হতো যদি সে গন্তব্য চিনতে না পারো তাহলে একেক জনের কাছ থেকে জিজ্ঞেস করে যেতে হতো।কিন্তু বর্তমানে স্মার্টফোনের মাধ্যমে মানুষ নিজেই নিজের গন্তব্যে পৌঁছাতে সক্ষম হতে পারছে।
স্মার্টফোন বর্তমানের জিপিএস ডিভাইস হিসেবেও কাজ করছে।জিপিএস ডিভাইস আপনাকে আপনার নিজস্ব গন্তব্যে পৌঁছে দেবে।আপনি যদি ড্রাইভার কিংবা পথচারী হন তাহলে লোকেশন ব্যবহার করে দিকনির্দেশ করতে পারবেন।
বিনোদন
স্মার্টফোনে বর্তমানে বিনোদনের কোন বিকল্পই নেই।প্রতিটি মানুষকে সারাদিনে কিছুটা সময় আরামদায়ক কিংবা হাসিখুশিতে থাকা দরকার।তখন আপনি আপনার স্মার্টফোনের মাধ্যমে নানা রকম ভিডিও,গান দেখার পাশাপাশি গেমস খেলতে পারেন।এটি বিনোদনের অন্যতম একটি মাধ্যম।
তথ্য আদান-প্রদান
স্মার্টফোন ব্যবহারের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট গুলোর মধ্যে তথ্য ট্রান্সফার অন্যতম একটি বিষয়। আর এখন আপনি খুব সহজেই স্মার্ট ফোন ব্যবহার করে এক ডিভাইস থেকে অন্য ডিভাইসে তথ্য আদান-প্রদান করতে পারছেন।এক সেকেন্ডের মাধ্যমে আপনি আপনার ডিভাইসে থাকা ফটো,ভিডিও কিংবা অন্যান্য ডকুমেন্ট অন্য ডিভাইসে নিতে করতে পারছেন।
এলার্ম সেট
হতে পারে আমি সকালবেলা অফিসে যেতে চান কিংবা সকাল বেলায় কোন একটা কাজের জন্য আপনাকে ঘুম থেকে তাড়াতাড়ি উঠতে হবে।এখন রাতে ঘুমানোর আগে আপনার মাথার চিন্তা একটাই আমি সকালে ঘুম থেকে উঠতে পারব তো?
এরকম সমস্যার সমাধান দিতে পারে স্মার্টফোন। উন্নত প্রযুক্তির যুগে এলার্ম সেট করার জন্য কোন টেবিল ঘড়ির প্রয়োজন হয় না। আপনি স্মার্টফোনে এলার্ম সেট করে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারেন সকালবেলায় ঠিক সময় অ্যালার্ম বেজে উঠবে।
স্মার্টফোন ব্যবহারে যেমন সুবিধা রয়েছে ঠিক তেমনি অসুবিধা ও রয়েছে তাই দেরি না করে জেনে নিন স্মার্টফোন ব্যবহারে অসুবিধা।
দামি
প্রযুক্তি বর্তমানে অনেক উন্নতশীল হয়ে উঠেছে।কিন্তু প্রযুক্তি যখন এত উন্নতিশীল ছিলনা তখন সর্বোচ্চ মানুষ কিপয়ার্ড ফোন ব্যবহার করত। হয়তো এখন সেই ফোনগুলি আজ বিরল।কিন্তু প্রযুক্তির উন্নতির জন্য নতুন নতুন ফোনগুলি বাজারে আসার কারণে ব্যয়বহুল বেড়েই যাচ্ছে। লোকেরা এই ফোনগুলোর পিছনে অনেক অর্থ ব্যয় করে থাকে।
স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর
এই অ্যান্ড্রয়েড ফোন গুলি প্রতিনিয়ত আপনার স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।স্মার্টফোন বেশি ব্যবহারের কারণে নানা রকম স্বাস্থ্যের ক্ষতিকর হতে পারে।প্রথমত আপনার চোখে সমস্যা তার সাথে রয়েছে মস্তিষ্কের কিংবা মরণব্যাধি ক্যান্সারের সমস্যাও হতে পারে।
আমাদের মধ্যে অনেকেই অভ্যাস রয়েছে ঘুম থেকে উঠেই আগে ফোনটা হাতে নিয়ে কতক্ষণ ঘাটাঘাটি করতে হবে।কিন্তু ঘুম থেকে উঠেই স্মার্টফোন ব্যবহার করা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক।
গোপনীয় তথ্য চুরি
যারা অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করে তাদের যে গোপনীয় কোন তথ্য থাকবে না এমনটা কিন্তু নয়। আপনার ভিডিও,ফটো কিংবা অন্যান্য গুটি পূর্ণ কিছু ফাইল এই স্মার্টফোনের মাধ্যমে চুরি হতে পারে। স্মার্টফোনে এক ডিভাইস থেকে অন্য একটি ডিভাইসের তথ্য কপি করার সহজ হলেও আইওএস অপারেটিং সিস্টেমে কিছুনা নিরাপত্তা রয়েছে।
পড়াশোনার ক্ষতি
বর্তমানে এই যুগে স্মার্টফোন সবথেকে বেশি ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলছে ছাত্রদের উপরে। এমনকি এটি গবেষণায় দেখা গেছে সব থেকে বেশি ছাত্র-ছাত্রীরা সময় কাটাচ্ছেন স্মার্টফোনের পেছনে। ফলে পড়ালেখার দিক থেকে রেজাল্টের উপর খুব ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলছে।
প্রিয়জনদের কাছ থেকে দূরত্ব
সোশ্যাল মিডিয়াতে সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকার কারণে বন্ধু-বান্ধব আত্মীয় স্বজনদের সাথে নিজের দূরত্ব টা বেড়েই চলেছে।যার কারণে প্রিয়জনদের সাথে দূরত্ব সৃষ্টি হয়।
গোপনীয়তা
বর্তমানে আমরা আমাদের মনের দুঃখ কষ্ট থেকে শুরু করে নিজের ফটো কিংবা ভিডিও,মনের কথা গুলি সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করে থাকি।যার কারণে আমাদের গোপনীয়তা বজায় থাকেনা।
পরিশেষে,
আজকের টপিকে সম্পূর্ণভাবে বিস্তারিত তুলে ধরতে চেষ্টা করেছি নতুন প্রযুক্তির স্মার্টফোন ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা। আশা করি আর্টিকেলটি সম্পর্কে আপনারা বিস্তারিত বুঝতে পেরেছেন। আর্টিকেলটি সম্পর্কে আপনাদের যদি কোনো মতামত থাকে কিংবা এরকম আরও আর্টিকেল পেতে চান তাহলে আমাদের নিচের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন-ধন্যবাদ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
ব্যাকলিংক পাওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে ইরিলেভেন্ট লিংক শেয়ার করার চেষ্টা করবেন না । স্পামিং করা থেকে বিরত থাকুন । আপনার লিংকটি যুক্তিসঙ্গত না হলে সেটি অ্যাপ্রুভ করা হবে না ।